ক্রীড়া প্রতিনিধিঃ লিটন কুমার দাস ও তামিম ইকবালের অনবদ্য জুটি, লিটনের বাংলাদেশের হয়ে ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিংয়ে অধিনায়ক হিসাবে শেষ ম্যাচে মাশরাফি বিন মুর্তজার টিম টাইগাররা জিম্বাবুয়ে বিরুদ্ধে দাপুটে জয়ে হোয়াইটওয়াশ করল। এবং এর মাধ্যমে মাশরাফি অধিনায়ক হিসাবে ৫০ ম্যাচ জয়ের স্বাদ লাভ করল।
আজ সিলেটে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে স্টেডিয়াম কানায় কানায় দর্শক উপস্থিত ছিল। কেননা আজ অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফির শেষ ম্যাচ ছিল। অবশ্য শেষ টস ভাগ্য ম্যাশের পক্ষে ছিল না। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন কুমার দাস। তারা তাদের অনবদ্য ব্যাটিং স্টাইলে দ্রুত গতিতে রান সংগ্রহ করতে থাকে।
এদিন জিম্বাবুয়ের বোলিংরা যেন দিশেহারা অবস্থা পরে। কোনো বোলাররাই সুবিধা করতে নামে নি। ইনিংসের ৩৩.২ ওভারের সময় শুরু হয় বৃষ্টি তখন বাংলাদেশের রান ছিল বিনা উইকেটে ১৮২। অর্থাৎ ওভারপ্রতি গড়ে ৬-এর নিচে। বৃষ্টিতে প্রায় দুই ঘণ্টা বন্ধ ছিল খেলা। ম্যাচের দৈর্ঘ্য নামিয়ে আনা হয় ৪৩ ওভারে। প্রায় ১০ ওভারের মতো ইনিংস বাকি থাকায় ব্যাটিংয়ে নেমেই ঝড় তুলেছেন দুই ওপেনার। বৃষ্টির আগে ১১৬ বলে ১০২ রান করেছিলেন লিটন। বৃষ্টি থামলে পুনরায় খেলা শুরুর পর তিনি খেলেছেন ২৭ বল—এর মধ্যে তুলেছেন ৭৪! ফলে এর দরুন লিটন বাংলাদেশের হয়ে ক্যারিয়ার সেরা ১৭৬ রান করে মাত্র ১৪৩ বলে।
সব মিলিয়ে তার ইনিংসে সে ৮ ছক্কা ও ১৬ চার মারেন এবং মুম্বার বলে ক্যাচ আউটের ফাঁদে পরলে দলের স্কোর ২৯২ রান। এর ফলে তারা ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের হয়ে ওপেনিং ই সর্বোচ্চ ও বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটির মাইল ফলক স্পর্শ করে। অন্য দিকে তামিম ইকবাল ও ক্যারিয়ারের তেরোতম সেঞ্চুরির দেখা পায়। সে ১২৮ রানে অপরাজিত থাকেন। উল্লেখ তামিম বৃষ্টির আগে ৮৪ বলে ৭৯ রানে অপরাজিত থাকা তামিম পুনরায় খেলা শুরুর পর ২৫ বলে তুলেছেন ৪৯। তামিমের ইনিংসে ছিল ৬ ছক্কা ও ৭টি চারের মার।লিটন আউট হওয়ার পরে সেই সেই মুম্বার বলে মাহমুদউল্লাহ (৩) ও অভিষিক্ত আফিফ হোসেনের (৭) উইকেট হারায়। ফলে নির্ধারিত ৪৩ ওভার শেষে বাংলাদেশ ৩২২ রান সংগ্রহ করে।
ডিএল মেথডের কারনে জিম্বাবুয়ের লক্ষ ছিল ৪৩ ওভারে ৩৪২ রান। বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ওপেনার তিনাসের উইকেট শিকার করেন বাংলাদেশের হয়ে শেষ ম্যাচ অধিনায়কত্ব করা মাশরাফি বিন মুর্তজা। এরপর টেইলর ও সাইফুদ্দিনের বলে কাটা পরে। জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক শেন উইলিয়াম অভিষিক্ত আফিফের বলে বোল্ড আউট হলে দলীয় স্কোর তখন ৭৪ রান।
এরপর তারা নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে। কিন্তু ব্যতিক্রম ছিল সিকান্দার রাজা। সে এক প্রান্ত আগলে রাখে। কিন্তু সে সাইফুদ্দিনের বলে ৬১ করে ক্যাচ আউট হলে ৩৩ বল বাকি থাকতেই দল ২১৮ রানে অল আউট হয়। ফলে দল ১২৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় পরে। বাংলাদেশের পক্ষে সাইফুদ্দিন ৪টি উইকেট শিকার করেন। ম্যাচ সেরা হন লিটন কুমার দাস। সিরিজ সেরা হন যৌথভাবে লিটন কুমার দাস ও তামিম ইকবাল খাঁন।
এর মাধ্যমেই ক্যাপ্টেন হিসেবে মাশরাফি তার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলল। এবং ৫০ ম্যাচ জয়ের মুখ দেখল।