নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মননশীল মানবিক সাংস্কৃতিক সংগঠন সেবাঘর সংঘের তৃতীয় প্রকল্প এম এন আখতার সংগীত সেবাঘরের আয়োজেন শুক্রবার বিকেল অনুষ্ঠিত হলো অভিভাবক সমাবেশ।
অভিভাবক সমাবেশের অংশ হিসেবে ছিলো বার্ষিক ফলাফল ও সনদপত্র প্রদান,পুরস্কার বিতরণ, বই পড়া কর্মসূচীতে উদ্বুদ্ধকরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কবি শেখর দেব,শিক্ষাগবেষক লিটন বড়ুয়া, সভাপতি হিসেবে ছিলেন সেবাঘর সংঘের মহাপরিচালক আনন্দ প্রকৃতি।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিলো আলোচনা অনুষ্ঠান।সেবাঘর সংঘের প্রার্থনা সংগীত “সবার সুখে হাসবো আমি,কাঁদবো সবার দুঃখে” পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়।
প্রধান অতিথি কবি শেখর দেব বলেন,সত্যিই আমি অভিভূত সেবাঘর সংঘের নানামুখী কর্মকান্ড দেখে।বর্তমান যুগে তরুণদের বই পড়ার প্রবণতা কমে গেছে।বই পড়া কর্মসূচি ও পাঠযাত্রা সেবাঘর সংঘের একটি সুন্দর ও সময়োপযোগী উদ্যোগ। যা তরুণদের বইপড়ার জন্য উৎসাহী করে তুলবে।মননশীল হতে হলে বই পড়তে হবে।বইয়ের বিকল্প নেই।
মনন শব্দের অর্থ চিন্তন, মনের ক্রিয়া,মনকে প্রসারিত করতে হলে বই পড়তে হবে,বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।শুধু পাঠ্যবই পড়ে মানুষ হওয়া যায় না।
শিক্ষা গবেষক লিটন বড়ুয়া বলেন,কোমলমতি শিশুদের পিটে তুলে দেওয়া হয়েছে ভারী ব্যাগ। ব্যাগের ওজন এত বেশি যে ব্যাগবহন করার শক্তি ও আজকাল সেই ছোট ছোট শিশুদের নেই।এখন ব্যাগ বহন করে নিয়ে যেতে দেখা যায় অভিভাবকদের,তাও ভালো।শিশুরা ভারী ব্যাগ বহন করার কষ্ট থেকে মুক্তি পাই।তিনি বলেন,আমাদের অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে,
পাড়া প্রতিবেশীকে ও সচেতন করতে হবে।সবাই যদি সুশিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চা করে, সংস্কৃতির সংস্পর্শে আশে, তাহলে অনেক অপরাধ কর্মকান্ড সমাজ থেকে বিলুপ্ত হবে। মানুষ মানবিক হয়ে গড়ে উঠবে,মানুষ একে অপরকে সাহায্য সহযোগিতা করবে, আন্তরিক মনোভাবাপন্ন হবে। যা বর্তমান সময়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সংস্কৃতি চর্চা মানুষকে মানবিক করে গড়ে তুলে।প্রকৃত মানুষ হতে সহায়তা করে, যা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে কখনোই সম্ভব নয়।
সভাপতির বক্তব্যে আনন্দ প্রকৃতি বলেন, মনুষ্যত্ব লাভের জন্য যেসব বই পড়া দরকার সেই সব বই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় পড়ানো হয় না।প্রাতিষ্ঠান শিক্ষা নিয়ে মনুষ্যত্ব লাভ করা যায় না।
বর্তমান তরুণ সমাজ সহিংসতার দিকে যাচ্ছে।এক মূল্যবোধহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য মনে হয় আমরা প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছি। ভবিষ্যৎ পৃথিবী হুমকির মুখে।অভিভাবকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন আপনারা সন্তানদের প্রাতিষ্ঠানিক বইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বই প্রবন্ধ,গল্প, সফলতার কাহিনী প্রভৃতি বই পড়তে উৎসাহিত করবেন।
এক জরিপে দেখা গেছে, যে সব শিক্ষার্থী গান করে না,আর যে সব শিক্ষার্থী গান করে,তাদের পরীক্ষার ফলাফলে তুলনামূলক পরীক্ষায় ভালো করেছে নিয়মিত গান করে যাওয়া শিক্ষার্থীরা।
সংগীত বা গান মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।অনেক অভিভাবকই পরীক্ষার আগে সন্তানদের গান শেখানো বন্ধ করে দেয়,এটা মোটে ও কাম্য নয়। অনুষ্ঠানে উর্ত্তীণ সংগীত শিক্ষার্থীদের মধ্যে সনদপত্র প্রদান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে আর ও বক্তব্য রাখেন সেবাঘর সংঘের অর্থ শিক্ষা ও সাহিত্য সম্পাদক জসীম উদ্দীন রণ সহ অভিভাবক সমাবেশে উপস্থিত অভিভাবকবৃন্দ।
দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অভিভাবক সমাবেশের পরিসমাপ্তি ঘটে।
অনুষ্ঠানটির উপস্হাপনায় ছিলেন এম এন আখতার সংগীত সেবাঘরের শিক্ষক ও সেবাঘর সংঘের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অমল কৃষ্ণ নাথ।