স্পোর্ট রিপোর্টারঃ বাংলাদেশের যুব টাইগাররা এই নতুন ইতিহাস রচনা করল। তারা শক্তিশালী ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ান ভারতকে ফাইনালে ৩ উইকেটে (ডি/এল) হারিয়ে প্রথম বারের মত চ্যাম্পিয়ন হবার কৃতিত্ব অর্জন করেছে। যা সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, মিরাজ, শান্ত, বিজয় করে দেখাতে পারেনি তাই করে দেখালো আকবর আলীর জুনিয়র লাল সবুজের সৈনিকরা।
দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে টস ভাগ্য বাংলাদেশের পক্ষে ছিল। টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় লাল সবুজের প্রতিনিধি আকবর আলী।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বাংলাদেশের যুব পেসারদের তোপে পরে ভারতীয়রা। দলীয় সপ্তম ওভারে সাক্সেনা মাত্র ২ করে দাসের বলে জয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে। এরপর ভারমা ও এই টুর্নামেন্টে সর্বাধিক রান সংগ্রাহক যশওয়াল ভালো জুটি গড়ে দলের ভিত মজবুত করে। কিন্তু ৩৮ করে ভারমা সাকিবের বলে ক্যাচ আউটের ফাঁদে পরলে তাদের ৯৪ রানের জুটি ভেঙে যায়।এরপর ভারতীয় অধিনায়ক প্রিয়ম রাকিবুলের বলে ক্যাচ আউট হয়ে দ্রুত মাট ত্যাগ করে।
কিন্তু একপ্রান্ত আগলে রাখা যশওয়াল এই টুর্নামেন্টে পঞ্চম ফিফটি প্লাস করে দলের রানের চাকা সচল করে। এরপর ৪০ তম ওভারে ৮৮ করে শরিফুলের বলে কাটা পরে যশওয়াল। এতে করে তার শতাধিক রানের স্বপ্ন ভেস্তে যায়। ভির ও ব্যাট করতে নেমে ঠিক পরের বলেই শরিফুলের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পরে আউট হলে দল বিপদে পরে। এবং তাদের স্কোর তখন ১৫৬ রান। এরপর শুরু হয় বাংলাদেশের বোলিং তান্ডব। অভিষেক দাসের বোলিং তোপে মাত্র ১৭৭ রানে অলআউট হয়। উল্লেখ শেষ ৭ উইকেট হারায় মাত্র ২১ রানে। অভিষেক দাস বাংলাদেশের পক্ষে সবোর্চ্চ ৩ টি উইকেট শিকার করেন।
১৭৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে বাংলাদেশের দুই ওপেনার তানজিব ও পারভেজ ইমন। তারা অর্ধ শতাধিক রানের জুটি গড়ে দলকে ভালো শুরু করে দেয়। কিন্তু বাজে শর্ট সিলেকশনের কারণে মাত্র ১৭ করে তানজিব বিশনয়ের বলে ক্যাচ আউট হয়। এরপর আগের দিনের ম্যাচ সেরা ও সেঞ্চুরিয়ান জয় ও দ্রুত আউট হয়। কিন্তু বাংলাদেশদ বিপদ পরে ইমনের ইনজুরি হয়ে মাঠ ত্যাগ করলে। এরপর ২৩ রানের মধ্যে বিশনয়ের অনবদ্য বোলিং ই বাংলাদেশের মিডল অর্ডারের ৩ ব্যাটম্যান সাজঘরে ফিরলে দল চরম বিপদে পরে। দলীয় স্কোর তখন দাঁড়াই ৫ উইকেটে ৮৫ রান। এরপর মিশ্রর বলে অভিষেক দাস দলীয় ১০২ রানে আউট হলে আবারো ফাইনাল হারের শঙ্কা দেখা যায়। ঠিক তখনই অবতারের মত মাঠে নামে ইনজুরিতে আক্রান্ত ইমন। তার ও আকবর আলীর অনবদ্য ব্যাটিং শৈলীতে দল জয়ের সুবাস পেতে থাকে। এরপর ৪৭ করে ইমন যশওয়ালের বলে কাটা পড়লে ম্যাচ আবারও জমে যায়। এরপর রকিবুল ও আকবর আলী ঠান্ডা মাথার ব্যাট করতে থাকে। জয়ের ১৫ রান বাকি থাকতেই ম্যাচে বৃষ্টি হানা দেয়। এতে ম্যাচ ৩০ মিনিট বন্ধ থাকে। আবারও ম্যাচ মাঠে গড়লে বাংলাদেশের দরকার ছিল ৫ ওভারের ৬ রান। কিন্তু ২৩ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দর পৌঁছে যায় বাংলাদেশের যুব টাইগাররা। এবং তারা প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ লাভ করে ও অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
ভারত অনূর্ধ্ব ১৯ দল – ১৭৭/১০ ৪৭.২ ওভার ( যশওয়াল ৮৮, ভারমা ৩৮, দাস ৩/৪০, সাকিব ২/২৮, শরিফুল ২/৩১)
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ দল – ১৭০/৭ ৪২.২ ওভার ( ইমন ৪৭, আকবর আলী ৪৩*, বিশনয় ৪/৩০, মিশ্র ২/২৫)
লক্ষ্যঃ বাংলাদেশের জয়ের ৪৬ ওভার ১৭০ রান দরকার ছিল।
ফলঃ বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ দল বৃষ্টি আইনে ৩ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরাঃ আকবর আলী (বাংলাদেশ)। টুর্নামেন্ট সেরাঃ যশওয়াল (ভারত)।