এবিএন: করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় সরকারি নানা উদ্যোগ তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে চিকিৎসার আওতায় আনতে চট্টগ্রামে দিনে ৫০০ নমুনা পরীক্ষার চেষ্টা চলছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৭ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আয়োজিত জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ বিষয়ক সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা অঞ্চলের তুলনায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের করোনা পরিস্থিতি এখনও ভালো। তবে গত কয়েকদিনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এখানে তিনগুন বেড়েছে। কয়েকজন মারাও গেছেন। এ অবস্থায় নমুনা পরীক্ষার পরিমাণ বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, বিআইটিআইডি, সিভাসু, চমেকের পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও (চবি) করোনার নমুনা পরীক্ষার ল্যাব চালুর চেষ্টা করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। কিছুদিনের মধ্যেই সেটি চালু করা হবে। সব মিলিয়ে চট্টগ্রামে দিনে অন্তত ৫০০ নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে চাই আমরা।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ১০টি ভেন্টিলেটরসহ আইসিইউ চালু করা হয়েছে। হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালের ২০টি আইসিইউ ইউনিট সরকারি ব্যবস্থাপনায় করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত হবে। ৬০টি বেড আইসোলেশনের জন্য থাকবে।
নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট প্রাপ্তিতে সময়ক্ষেপণ বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট প্রাপ্তিতে সময় কমিয়ে ৪ দিনে নামিয়ে আনা হয়েছে। তবে এ সময়ে যিনি পরীক্ষার জন্য স্যাম্পল জমা দিয়েছেন তিনি যেন ঘরে থাকেন।
যারা চাইতে পারে না, তারাও যেন ত্রাণ পায়:
করোনা ভাইরাসের প্রভাবে উপার্জনহীন হয়েও যারা সামাজিক মর্যাদা রক্ষায় ত্রাণ চাইতে পারেন না, তাদের জন্য ত্রাণ সহায়তা নিশ্চিত করতে সভায় সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশ লোককে ত্রাণ সহায়তার আওতায় এনেছে। পৃথিবীর খুব কম দেশেই করোনা পরিস্থিতিতে এতো লোককে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
‘সরকারি ত্রাণ সহায়তা বিতরণের সময় এক ব্যক্তি যেন বারবার ত্রাণ না পায় সেটি দেখতে হবে। অন্যদিকে যে ত্রাণ সহায়তা চাইতে পারে না, তার কাছেও ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাতে হবে। এজন্য নিজেদের মধ্যে আরও বেশি সমন্বয় করতে হবে।’
জীবন বাঁচাতে জীবিকাও বাঁচাতে হবে:
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই পরিস্থিতিতে জীবন এবং জীবিকা দুটোই বাঁচাতে কাজ করছে সরকার। এ কারণে ১০ মে থেকে মার্কেটগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ খেটে খাওয়া মানুষ, ব্যবসায়ী- সবার দাবি ছিলো এটি।
‘স্পেনে এখনও দিনে ২৫০-৩০০ মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। কিন্তু সেখানে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশেই লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। কারণ জীবন রক্ষায় জীবিকাও রক্ষা করতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে দোকান-পাট সীমিত আকারে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিটি মার্কেট এবং শপিং মলে সতর্কভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে।
‘চট্টগ্রামের মার্কেটগুলোর প্রবেশ পথে ডিস ইনফেকশান চেম্বার স্থাপন করা হবে। ঢোকার সময় যদি কেউ ডিস ইনফেকশান চেম্বার দিয়ে ঢোকে, তাহলে তিনি ডিস ইনফেকটেড হয়ে যাবেন। ক্রেতা-বিক্রেতা সবাইকে মাস্ক অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। নিজেদের মধ্যে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।’
সভায় সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ, বন্দর চেয়ারম্যান, ডিআইজি, সিএমপি কমিশনার, জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, বিআইটিআইডি’র পরিচালক, সিভিল সার্জন উপস্থিত ছিলেন।