স্পোর্ট রিপোর্টারঃ শেষ ওভারের রোমাঞ্চে সিরিজ জয় নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। তারা জিম্বাবুয়েকে ৪ রান পরাজিত করেছে। কিন্তু ম্যাচটা যে এইরকম রোমাঞ্চ ছড়াবে তা কেউ ভাবতে পারে নি কেউ।
টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় মাশরাফির বাংলাদেশ। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই রান আউটের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন আগের দিনের সেঞ্চুরিয়ান লিটন কুমার দাস। এরপর নাজমুল হোসেন শান্তও রান আউটের ফাঁদে পরলে দলের স্কোর তখন দাঁড়াই ৬৫ রান। কিন্তু দলকে বিপদের হাত থেকে বের করে টানা ব্যর্থতায় মুখে সমলোচনায় থাকা তামিম ইকবাল। তার ও মুশফিকের অনবদ্য জুটিতে দল ভালো ভিতের দিকে থাকে। মুশফিক ৫৫ রান কাটা পড়লে দলের স্কোর ১৫২ রান।
এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সাথে ১০৬ রান জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যায় তামিম। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৪১ করে তুসুমার বলে ক্যাচ আউট হলেও তামিম তার ক্যারিয়ারের বার তম সেঞ্চুরির স্বাদ পাই। এরপর শুরু করে তার ব্যাটিং তান্ডব। শেষ ১৩৫ বলে ১৫৮ রান করে আউট হয়। এবং বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডেতে সবোর্চ্চ ইনিংস উপহার দেয়। যদিও আগের রেকর্ডটা তারই ছিল। এরপর শুরু হয় ব্যাটম্যানদের আসা যাওয়া মিছিল। লোয়ারঅর্ডারের ব্যর্থতাই দল শেষ পর্যন্ত ৩২২ রান সংগ্রহ করে ৮ উইকেটের বিনিময়ে। মিথুন ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন। আর জিম্বাবুয়ের পক্ষে দুটি করে উইকেট শিকার করেন তিরিপানো আর মুম্বা।
৩২৩ রানের লক্ষ্যে তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় জিম্বাবুয়ে। তারা শফিউল ইসলামের বলে লিটনের হাতে ক্যাচ আউট হয় চাকাভা মাত্র ২ রান করে। এরপর টেইলরকে মিরাজ অবিশ্বাস্য ভাবে রান আউট করে। শেন উইলিয়ামও মিরাজের বলে কাটা পড়লে দল বিপদে পরে এবং দলের স্কোর তখন ৬৭ রান। এরপর ওপেনার তিনাসে ও ওয়েসলি জুটি গড়ে দলকে বিপদ থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনাসে ৫১ করে তাইজুলের বলে বোল্ড আউট হলে দল আবারও বিপদে পরে। এরপর সিকান্দার রাজা ও ওয়েসলি ৮১ রান সংগ্রহ করে দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যায়। কিন্তু ওয়েসলি ৫২ করে তাইজুলের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পরলে দলের স্কোর তখন ১৮৩ রান। মুতাতম্বিও তাইজুলের বলে লেগ বিফোরের শিকার হলে দলের হারের শঙ্কার মধ্যে পরে।
সিকান্দার রাজা ৬৬ করে মাশরাফি বিন মুর্তজার শিকার হলে দলের হারের শঙ্কা জোরালো হয়। হার তখন সময়ের ব্যাপার তা মনে হয়। কিন্তু এর পর শুরু হয় ম্যাচের রোমাঞ্চকর অধ্যায়। মুতাবম্বজি ও তিরিপানোর বিধ্বংসী ইনিংসে ম্যাচের লাগাম আবারও জিম্বাবুয়ের হাতে নিয়ে আসে। তার দ্রুত গতিতে রান তুলতে থাকে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য তাদের ২০ রান দরকার ছিল। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে মুতাবম্বজি ৩৪ করে আউট হয় আল আমিনের বলে ক্যাচ আউট হলে তাদের ৮০ রানের অবিশ্বাস্য জুটি ভেঙে যায়। এরপর তিরিপানো পরপর দুই বলে দুই ছক্কা হাঁকালে সে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করে এবং জয়ের জন্য দুই বলে ৬ রান দরকার ছিল। কিন্তু শেষ দুই বলে মাত্র ১ রান সংগ্রহ করে তিরিপানো। ফলে ৪ রান দূরে থেকেই ইনিংস থেমে যায়। তারা ৮ উইকেট হারিয়ে ৩১৮ রান সংগ্রহ করে।
টসঃ বাংলাদেশ। সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
বাংলাদেশ – ৩২২/৮; ৫০ ওভার (তামিম ১৫৮, মুশফিক ৫৫, মাহমুদউল্লাহ ৪১, মিথুন ৩২*, তিরিপানো ২/৫৫,মুম্বা ২/৬৪) জিম্বাবুয়ে – ৩১৮/৮; ৫০ ওভার ( তিনাসে ৫১, ওয়েসলি ৫২, রাজা ৬৬, মুতাবম্বজি ৩৪, তিরিপানো ৫৫*, তাইজুল ৩/৫২)
ফলঃ বাংলাদেশ ৪ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরাঃ তামিম ইকবাল খাঁন।
সিরিজঃ বাংলাদেশ সিরিজে ২-০তে এগিয়ে।